পোস্টগুলি

প্রতি ঘরে অক্সিজেন সিলিন্ডার: জরুরি স্বাস্থ্যের এক নতুন দিগন্ত

ছবি
 কোভিড-১৯ মহামারীর সময় আমরা সবাই দেখেছি, অক্সিজেনের অভাবে কিভাবে অসংখ্য মানুষ অসহায়ভাবে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েছে। হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনের জন্য হাহাকার, এক একটি সিলিন্ডারের জন্য লম্বা লাইন—এসব দৃশ্য আমাদের এক ভয়াবহ বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। এই সংকট আমাদের শিখিয়েছে যে, জীবন বাঁচাতে অক্সিজেন কতটুকু অপরিহার্য এবং একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার কত বড় আশীর্বাদ হতে পারে। তাই এখন সময় এসেছে একটি নতুন ভাবনাকে গুরুত্ব দেওয়ার: প্রতিটি ঘরে অন্তত একটি করে অক্সিজেন সিলিন্ডার রাখা। এটি শুধু একটি জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম নয়, বরং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এক নতুন দিগন্তের সূচনা। এর ফলে জীবন বাঁচানোর সম্ভাবনা যেমন বাড়বে, তেমনি হাসপাতালগুলোর ওপর থেকেও চাপ কমবে। কেন প্রতি ঘরে অক্সিজেন সিলিন্ডার থাকা জরুরি? অক্সিজেন মানুষের জীবনের জন্য সবচেয়ে মৌলিক উপাদান। শ্বাসকষ্টজনিত যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে, তা যতই অপ্রত্যাশিত হোক না কেন, অক্সিজেনের দ্রুত সরবরাহ জীবন ও মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। নিচে এমন কিছু পরিস্থিতি তুলে ধরা হলো যেখানে ঘরে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার থাকলে তা জীবন রক্ষাকারী হতে পারে...

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্য: যেখানে জাহাজ ও বিমানেরা হারিয়ে যায়

ছবি
 বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল, যা 'শয়তানের ত্রিভুজ' নামেও পরিচিত, উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের একটি রহস্যময় অঞ্চল। ফ্লোরিডা, বারমুডা এবং পুয়ের্তো রিকোর মধ্যে ত্রিকোণাকৃতির এই জলভাগে বহু জাহাজ ও বিমান রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষের মনে বিস্ময় ও ভয়ের জন্ম দিয়েছে। কোনো সুস্পষ্ট বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ছাড়াই এসব অন্তর্ধানের ঘটনা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলকে পৃথিবীর অন্যতম বিখ্যাত রহস্যের কেন্দ্রে পরিণত করেছে। বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের ভৌগোলিক অবস্থান ও পরিচিতি বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল প্রায় ৫ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এই অঞ্চলের আবহাওয়া প্রায়শই অপ্রত্যাশিতভাবে পরিবর্তিত হতে পারে, যেখানে দ্রুত ঝড়, তীব্র স্রোত এবং গভীর খাদ বিদ্যমান। স্বাভাবিক জাহাজ চলাচল ও বিমান উড্ডয়নের জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জিং এলাকা। তবে, কেবল প্রতিকূল আবহাওয়াই এখানে রহস্যময় অন্তর্ধানের একমাত্র কারণ বলে মনে করা হয় না। উল্লেখযোগ্য রহস্যময় অন্তর্ধানের ঘটনা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্যকে আরও ঘনীভূত করেছে বেশ কিছু বিখ্যাত অন্তর্ধানের ঘটনা: ১. ফ্লাইট ১৯ (১৯৪৫): পাঁচটি মার্কি...

ডিজিটাল পৃথিবীর জ্যাম: আধুনিক জীবনে এক নীরব ট্রাফিক জ্যাম

ছবি
 আমাদের চারপাশের পৃথিবীটা আজ প্রযুক্তির সুতোয় বোনা এক বিশাল জাল। হাতে হাতে স্মার্টফোন, কানে ইয়ারফোন, আর চোখ আটকে আছে ভার্চুয়াল জগতে। একসময় যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে তৈরি হওয়া এই প্রযুক্তি আজ আমাদের জীবনের চালক হয়ে উঠেছে। কিন্তু আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি, এই ডিজিটাল ব্যস্ততা আসলে আমাদের জীবনকে এক নীরব ট্রাফিক জ্যামে আটকে ফেলছে? যে জ্যামে কোনো হর্ন বাজে না, কোনো কোলাহল নেই, কিন্তু এর গতিহীনতা আমাদের মূল্যবান সময়, মনোযোগ এবং মানসিক শান্তি কেড়ে নিচ্ছে। এই জ্যামের নামই 'ডিজিটাল পৃথিবীর জ্যাম'। জ্যামের কারণ: কেন আমরা আটকে পড়ছি? এই জ্যামটি কোনো সাধারণ ট্রাফিক জ্যাম নয়। এর কারণগুলো আরও জটিল এবং মনস্তাত্ত্বিক: ১. তথ্যের স্রোত: আমাদের নিউজফিড, ইনবক্স এবং নোটিফিকেশন বার সবসময় নতুন নতুন তথ্যে ভরপুর থাকে। এটি কেবল সংবাদ বা ছবি নয়, এটি একটি নিরন্তর এবং কখনও না শেষ হওয়া তথ্যের স্রোত। এই স্রোতে ভেসে গিয়ে আমরা আমাদের নিজস্ব চিন্তা ও সৃজনশীলতা হারিয়ে ফেলি। ২. মিথ্যে ব্যস্ততা: আমরা হয়তো ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্ক্রল করছি, একের পর এক ভিডিও দেখছি, অথবা সামাজিক মাধ্যমে অন্যের জীবন দেখে নিজেদের জীবনকে বিচার...

বাংলার হারিয়ে যাওয়া লোকশিল্প ও কারুশিল্প: ঐতিহ্য, সংকট এবং পুনরুজ্জীবনের গল্প

ছবি
  বাংলার মাটি, জল আর মানুষের জীবনযাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো তার লোকশিল্প ও কারুশিল্প। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই ভূখণ্ডের আনাচে-কানাচে গড়ে উঠেছে এক অনন্য শৈল্পিক ঐতিহ্য, যা কেবল হাতের কাজ নয়, বরং জীবনদর্শন, সামাজিক রীতিনীতি আর সৃজনশীলতার এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। নকশি কাঁথা থেকে শুরু করে শিতল পাটি, মৃৎশিল্প থেকে বাঁশের কাজ—প্রতিটি শিল্পকর্মই ধারণ করে আছে বাংলার হাজার বছরের ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে। একসময় যে শিল্পকর্মগুলো ছিল বাঙালির দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ, আজ কালের বিবর্তনে, শিল্পায়নের প্রভাবে এবং পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে তার অনেক কিছুই হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে আশার কথা এই যে, সাম্প্রতিক সময়ে কিছু উদ্যোগ, ব্যক্তি ও সংগঠনের প্রচেষ্টায় এই হারিয়ে যাওয়া শিল্পগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করার এক সংগ্রাম শুরু হয়েছে। এটি শুধু শিল্পের পুনরুজ্জীবন নয়, বরং বাংলার আত্মপরিচয়কে নতুন করে খুঁজে পাওয়ার এক প্রচেষ্টা। বাংলার লোকশিল্পের গৌরবময় অতীত: বৈচিত্র্য ও ঐতিহ্য বাংলার লোকশিল্পের ইতিহাস অত্যন্ত প্রাচীন ও সমৃদ্ধ। প্রতিটি অঞ্চলের নিজস্বতা আর প্রাকৃতিক উপকরণের সহজলভ্যতা এই শিল্পকে দিয়েছে এ...

মোবাইল ফোনে আমাদের মস্তিষ্কের স্বাধীনতা কতটুকু?

ছবি
  একটা সময় ঘড়ি দেখা, গান শোনা, ছবি তোলা এবং খবর পড়ার জন্য আলাদা আলাদা যন্ত্রের প্রয়োজন হতো। আজ সবই আছে একটি ছোট আকারের বক্সে—মোবাইল ফোনে। প্রযুক্তির এই বিস্ময় আজ আমাদের জীবনের অংশ নয়, বরং নিয়ন্ত্রক। কিন্তু এই যন্ত্রের প্রভাব কি শুধুই উপকারে সীমাবদ্ধ? আমাদের মস্তিষ্কের উপর এই ছোট্ট পর্দাটির দখল কতখানি? আমরা নিজেরাই কি আর সিদ্ধান্ত নিতে পারছি—নাকি অ্যালগরিদমই আমাদের চিন্তা-ভাবনা, আবেগ, এমনকি মনোযোগও ঠিক করে দিচ্ছে? মনোযোগের মৃত্যু: স্ক্রিন টাইম ও ব্রেইন ফাংশনের সম্পর্ক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনুযায়ী, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি দিনে গড়ে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমায়। কিন্তু একইসাথে, আজকের একজন স্মার্টফোন ব্যবহারকারী দিনে গড়ে ৫-৬ ঘণ্টা সময় কাটান তার ফোনে—বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে। বিশ্লেষণ বলছে, মোবাইল স্ক্রিনের অবিরাম নোটিফিকেশন, রিলস, শর্টস, ফিডস্ক্রল আমাদের মনোযোগ খেয়ে নিচ্ছে। সাইকোলজিস্ট ড. গ্লোরিয়া মার্ক ২০০৪ সালে গবেষণায় দেখিয়েছিলেন, একজন কর্মী গড়ে ৩ মিনিট মনোযোগ ধরে রাখতে পারে। ২০২৩ সালে এই সময় দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪৭ সেকেন্ড। আমাদের মস্তিষ্কে প্রতিটি ডিসট্রাকশনের সময় ডোপামিন নিঃসরণ হয়।...

ইতিহাসের বিস্মৃত অধ্যায়: ১০ জন অকথিত বাঙালি মহামানব ও তাঁদের নীরব অবদান

ছবি
 ইতিহাসের পাতায় আমরা কেবল কিছু নির্বাচিত মানুষের গল্প দেখতে পাই, যাদের নাম উজ্জ্বল অক্ষরে লেখা থাকে। কিন্তু বাংলার মাটি ও মানুষের সাথে মিশে আছে এমন অসংখ্য মানুষের নীরব আত্মত্যাগ ও অবদান, যাদের কথা তেমনভাবে উচ্চারিত হয় না। তারা হয়তো রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ছিলেন না, বা বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জন করেননি, কিন্তু তাদের কর্মক্ষেত্র, তাদের জ্ঞান ও তাদের মানবসেবা স্থানীয় সমাজে এবং বৃহত্তর বাঙালি সংস্কৃতিতে এক গভীর প্রভাব ফেলেছিল। এই প্রতিবেদনে আমরা তেমনই ১০ জন প্রকৃত বাঙালি মহামানবের জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানব, যারা তাদের নিরলস পরিশ্রমে বাংলার লোকসংস্কৃতি, জ্ঞানচর্চা এবং সামাজিক কাঠামোকে সমৃদ্ধ করেছেন। ইতিহাসের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ১০ জন অকথিত বাঙালি মহামানব: ১.  হরিনাথ মজুমদার (কাঙাল হরিনাথ) (১৮৩৩-১৮৯৬) হরিনাথ মজুমদার, যিনি 'কাঙাল হরিনাথ' নামেই অধিক পরিচিত, ছিলেন নদীয়ার কুমারখালীর এক কিংবদন্তী। তিনি ছিলেন একজন অদম্য সাংবাদিক, সমাজ সংস্কারক এবং নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে নিপীড়িত কৃষকদের কণ্ঠস্বর। তাঁর প্রতিষ্ঠিত 'গ্রামবার্তা প্রকাশিকা' (১৮৬৩ সাল) পত্রিকা ছিল বাংল...

বিবাহিত জীবনে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক: কেমন হওয়া উচিত?

ছবি
 বিবাহিত জীবন একটি দীর্ঘ পথচলা, যেখানে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কই হলো মূল ভিত্তি। এই সম্পর্ক কেবল দুজন মানুষের বন্ধন নয়, এটি দুটি পরিবারের মিলন এবং নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নির্ধারণেরও সহায়ক। একটি সফল ও সুখী বিবাহিত জীবনের জন্য স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়ে বহু আলোচনা থাকলেও কিছু মৌলিক স্তম্ভ রয়েছে যা এই সম্পর্ককে মজবুত ও সুন্দর করে তোলে। এটি শুধু ভালোবাসা নয়, বরং বোঝাপড়া, সম্মান, বিশ্বাস এবং পারস্পরিক নির্ভরতার এক সুন্দর সমীকরণ। ১. বোঝাপড়া ও সহানুভূতি: সম্পর্কের মেরুদণ্ড স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের প্রথম এবং প্রধান ভিত্তি হলো বোঝাপড়া। প্রতিটি মানুষই স্বতন্ত্র, তাদের চিন্তা-ভাবনা, পছন্দ-অপছন্দ ভিন্ন হতেই পারে। এই ভিন্নতাকে সম্মান জানানো এবং একে অপরের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার চেষ্টা করাই হলো বোঝাপড়া।  * শ্রবণ ও উপলব্ধি: একে অপরের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা এবং তার অনুভূতিগুলো উপলব্ধি করার চেষ্টা করা। কেবল নিজের মতামত চাপিয়ে না দিয়ে সঙ্গীর যুক্তি বা আবেগকে বোঝার ক্ষমতা থাকা।  * সহানুভূতি: সঙ্গীর আনন্দ, দুঃখ, হতাশা বা উদ্বেগে পাশে থাকা এবং তার অনুভূতিতে সমব্যথী হওয়...